বৌদ্ধধর্ম

ভারতপিডিয়া থেকে
পরিভ্রমণে চলুন অনুসন্ধানে চলুন
বৌদ্ধধর্ম
Dharma Wheel.svg
ধর্মচক্র
মোট জনসংখ্যা
৫২ কোটি
প্রতিষ্ঠাতা
সিদ্ধার্থ গৌতম
উল্লেখযোগ্য জনসংখ্যার অঞ্চল
দক্ষিণদক্ষিণপূর্ব এশিয়া, পূর্ব এশিয়া, মধ্য এশিয়া
ধর্ম
থেরবাদ, মহাযান, বজ্রযান
ধর্মগ্রন্থ
বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থ, ত্রিপিটক, পালি ত্রিপিটক, মহাপ্রজ্ঞাপারমিতা সূত্র
ভাষা
সংস্কৃত, পালি, তিব্বতি, চীনা
standing Buddha statue with draped garmet and halo
টোকিও জাতীয় জাদুঘরে দণ্ডায়মান বুদ্ধমূর্তি। বুদ্ধের অন্যতম প্রাচীন প্রতিকৃতি, খ্রিষ্টীয় ১ম–২য় শতাব্দী

বৌদ্ধধর্ম (সংস্কৃত: बौद्धधर्मः, পালি: বৌদ্ধধম্ম) একটি ভারতীয় ধর্ম বা দার্শনিক ঐতিহ্য[১] এটি বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম ধর্ম[২][৩] যার অনুসারী সংখ্যা ৫২০ মিলিয়নেরও বেশি বা বৈশ্বিক জনসংখ্যার ৭ শতাংশের অধিক এবং তারা বৌদ্ধ হিসেবে পরিচিত।[৪][৫] বৌদ্ধধর্ম বৈচিত্র্যময় ঐতিহ্য, বিশ্বাস ও আধ্যাত্মিক চর্চাকে ধারণ করে যেগুলো মূলত সিদ্ধার্থ গৌতমের মৌলিক শিক্ষা ও এর ব্যাখ্যাকৃত দর্শনের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। এটি খ্রিষ্টপূর্ব ৬ষ্ঠ ও ৪র্থ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে প্রাচীন ভারতে একটি শ্রমণ ঐতিহ্য হিসেবে উৎপত্তিলাভ করে এবং এশিয়ার বেশিরভাগ অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। বৌদ্ধধর্মের তিনটি প্রধান বিদ্যমান শাখা সাধারণত পণ্ডিতদের দ্বারা স্বীকৃত: থেরবাদ, মহাযানবজ্রযান

বুদ্ধের চার আর্যসত্য মোতাবেক বৌদ্ধধর্মের লক্ষ্য হল তৃষ্ণা বা আসক্তি ও অবিদ্যার ফলে উদ্ভূত দুঃখ নিরসন করা।[৬] অধিকাংশ বৌদ্ধ ঐতিহ্য নির্বাণলাভের মাধ্যমে অথবা বোধিসত্ত্বকে অনুসরণপূর্বক সংসার তথা মৃত্যু ও পুনর্জন্মচক্রের অবসান ঘটিয়ে স্বতন্ত্র সত্তাকে অতিক্রম করার ওপর জোর দিয়ে থাকে।[৭][৮][৯] বৌদ্ধ চিন্তাধারাগুলোতে তাদের মোক্ষলাভের উপায়ের ব্যাখ্যা, বিভিন্ন বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থের আপেক্ষিক গুরুত্ব ও ধর্মসম্মতি এবং তাদের নির্দিষ্ট শিক্ষা ও অনুশীলনের ক্ষেত্রে ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়।[১০][১১] ব্যাপকভাবে উদ্‌যাপিত অনুশীলনগুলোর মধ্যে রয়েছে বুদ্ধ, ধর্মসংঘের শরণ নেওয়া, নৈতিকতা, ভিক্ষুত্ব, ধ্যান এবং পারমিতার চর্চা।

থেরবাদ বৌদ্ধধর্ম শ্রীলঙ্কা এবং দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার কম্বোডিয়া, লাওস, মায়ানমারথাইল্যান্ডে ব্যাপকভাবে অনুসৃত হয়। মহাযান বৌদ্ধধর্ম—পুণ্যভূমি, জেন, নিচিরেন, শিঙ্গোন ও তিয়ান্তাই ঐতিহ্য যার অন্তর্ভুক্ত—মূলত পূর্ব এশিয়া জুড়ে পাওয়া যায়। বজ্রযান বৌদ্ধধর্ম—যা ভারতীয় মহাসিদ্ধদের তন্ত্রসাধনা ও শিক্ষা দ্বারা উদ্ভূত—একটি পৃথক শাখা অথবা মহাযান বৌদ্ধধর্মের একটি ধারা হিসেবে বিবেচিত হয়।[১২] তিব্বতি বৌদ্ধধর্ম—যা অষ্টম শতাব্দীর ভারতের বজ্রযান শিক্ষাবলিকে ধারণ করে—হিমালয় অঞ্চল, মঙ্গোলিয়া[১৩]কালমিকিয়াতে চর্চিত হয়।[১৪]

ব্যুৎপত্তি

আক্ষরিক অর্থে "বুদ্ধ" বলতে একজন জ্ঞানপ্রাপ্ত, উদ্বোধিত, জ্ঞানী, জাগরিত মানুষকে বোঝায়। উপাসনার মাধ্যমে উদ্ভাসিত আধ্যাত্মিক উপলব্ধি এবং পরম জ্ঞানকে বোধি বলা হয় (যে অশ্বত্থ গাছের নিচে তপস্যা করতে করতে বুদ্ধদেব বুদ্ধত্ব লাভ করেছিলেন তার নাম এখন বোধি বৃক্ষ)। সেই অর্থে যে কোনও মানুষই বোধিপ্রাপ্ত, উদ্বোধিত এবং জাগরিত হতে পারে। সিদ্ধার্থ গৌতম এইকালের এমনই একজন "বুদ্ধ"। বুদ্ধত্ব লাভের পূর্ববর্তী (জাতকে উল্লেখিত) জীবন সমূহকে বলা হয় বোধিসত্ত্ব। বোধিসত্ত্ব জন্মের সর্বশেষ জন্ম হল বুদ্ধত্ব লাভের জন্য জন্ম। ত্রিপিটকে, বোধিসত্ত্ব হিসেবে ৫৪৭ (মতান্তরে ৫৫০) বার বিভিন্ন কূলে (বংশে) জন্ম নেবার ইতিহাস উল্লেখ আছে যদিও সুমেধ তাপস হতে শুরু করে সিদ্ধার্থ পর্যন্ত অসংখ্যবার তিনি বোধিসত্ত্ব হিসেবে জন্ম নিয়েছেন ।[১৫] তিনি তার আগের জন্মগুলোতে প্রচুর পুণ্যের কাজ বা পারমী সঞ্চয় করেছিলেন বিধায় সর্বশেষ সিদ্ধার্থ জন্মে বুদ্ধ হবার জন্য জন্ম গ্রহণ করেন। বুদ্ধত্ব লাভের ফলে তিনি এই দুঃখময় সংসারে আর জন্ম নেবেন না, এটাই ছিলো তার শেষ জন্ম। পরবর্তী মৈত্রেয় বুদ্ধ জন্ম না নেওয়া পর্যন্ত পৃথিবীতে তার শাসন চলবে।

গৌতম বুদ্ধের জীবনী

উত্তর-পূর্ব ভারতের কপিলাবস্তু নগরীর ক্ষত্রিয় রাজা শুদ্ধোধন এর পুত্র ছিলেন সিদ্ধার্থ (গৌতম বুদ্ধ)। খ্রিস্টপূর্ব ৫৬৩ অব্দে এক শুভ বৈশাখী পূর্ণিমা তিথিতে লুম্বিনি কাননে (বর্তমান নেপাল) জন্ম নেন সিদ্ধার্থ(গৌতম বুদ্ধ)। তার জন্মের ৭ দিন পর মহামায়া মারা যান। তার জন্মের অব্যাবহিতকাল পর অসিত নামক এক সন্ন্যাসী কপিলাবস্তু নগরীতে আসেন। তিনি সিদ্ধার্থকে দেখে ভবিষ্যৎবানী করেন যে, সিদ্ধার্থ ভবিষ্যতে হয় চারদিকজয়ী (চক্রবর্তী রাজা) রাজা হবেন, নয়ত একজন মহান মানব হবেন। মা মারা যাবার পর সৎ মা মহাপ্রজাপতি গৌতমী তাকে লালন পালন করেন, তাই তার অপর নাম গৌতম। ছোটোবেলা থেকেই সিদ্ধার্থ সব বিষয়ে পারদর্শী ছিলেন। কিন্তু সিদ্ধার্থ সংসারের প্রতি উদাসীন ছিলেন বলে তাকে সংসারী করানোর লক্ষ্যে ১৬ বছর বয়সে রাজা শুদ্ধোধন যশোধরা (যিনি যশ ধারণ করেন) মতান্তরে যশোধা বা গোপা দেবী নামক এক সুন্দরী রাজকন্যার সাথে তার বিয়ে দেন। রাহুল নামে তাদের একটি ছেলে সন্তান হয়। ছেলের সুখের জন্য রাজা শুদ্ধোধন চার ঋতুর জন্য চারটি প্রাসাদ তৈরি করে দেন। কিন্তু উচুঁ দেয়ালের বাইরের জীবন কেমন তা জানতে তিনি খুবই ইচ্ছুক ছিলেন। একদিন রথে চড়ে নগরী ঘোরার অনুমতি দেন তার পিতা। নগরীর সকল অংশে আনন্দ করার নির্দেশ দেন তিনি, কিন্তু সিদ্ধার্থের মন ভরল না। প্রথম দিন নগরী ঘুরতে গিয়ে একজন বৃদ্ধ ব্যক্তি, দ্বিতীয় দিন একজন অসুস্থ মানুষ, তৃতীয় দিন একজন মৃত ব্যক্তি এবং চতুর্থ দিন একজন সন্ন্যাসী দেখে তিনি সারথি ছন্দককে প্রশ্ন করে জানতে পারেন জগৎ দুঃখময়। তিনি বুঝতে পারেন সংসারের মায়া, রাজ্য, ধন-সম্পদ কিছুই স্থায়ী নয়। তাই দুঃখের কারণ খুঁজতে গিয়ে ২৯ বছর বয়সে গৃহ্ত্যাগ করেন। দীর্ঘ ৬ বছর কঠোর সাধনার পর তিনি বুদ্ধগয়া নামক স্থানে একটি বোধিবৃক্ষের নিচে বোধিজ্ঞান লাভ করেন। সবার আগে বুদ্ধ তার ধর্ম প্রচার করেন পঞ্চ বর্গীয় শিষ্যের কাছে; তারা হলেন কৌন্ডিন্য, বপ্প, ভদ্দিয় (ভদ্রিয়), মহানাম এবং অশ্বজিত। এরপর দীর্ঘ ৪৫ বছর বুদ্ধ ভারতের বিভিন্ন স্থানে তার বৌদ্ধ ধর্মের বাণী প্রচার করেন। এবং তার প্রচারিত বাণী ভারত ছাড়াও অন্যান্য দেশেও দিকে-দিকে ছড়িয়ে পড়ে। অবশেষে খ্রিস্টপূর্ব ৪৮৩ অব্দে তিনি কুশীনগর নামক স্থানে ৮০ বছর বয়সে মৃত্যু বরন করেন। গৌতম বুদ্ধের প্রচারিত বাণীর মূল অর্থ হল অহিংসা।

বুদ্ধের দর্শন

বুদ্ধের দর্শনের প্রধান অংশ হচ্ছে দুঃখের কারণ ও তা নিরসনের উপায়। বাসনা হল সর্ব দুঃখের মূল। বৌদ্ধমতে সর্বপ্রকার বন্ধন থেকে মুক্তিই হচ্ছে প্রধান লক্ষ্য- এটাকে নির্বাণ বলা হয়। নির্বাণ শব্দের আক্ষরিক অর্থ নিভে যাওয়া (দীপনির্বাণ, নির্বাণোন্মুখ প্রদীপ), বিলুপ্তি, বিলয়, অবসান। কিন্তু বৌদ্ধ মতে নির্বাণ হল সকল প্রকার দুঃখ থেকে মুক্তি লাভ। এই সম্বন্ধে বুদ্ধের চারটি উপদেশ যা চারি আর্য সত্য (পালিঃ চত্বারি আর্য্য সত্যানি) নামে পরিচিত। তিনি অষ্টাঙ্গিক মার্গ উপায়ের মাধ্যমে মধ্যপন্থা অবলম্বনের উপর বিশেষ জোর দিয়েছেন।

পরকাল

বুদ্ধ পরকাল সম্বন্ধে অনেক কিছুই বলে গেছেন, পরকাল নির্ভর করে মানুষের ইহ জন্মের কর্মের উপর । মৃত্যুর পর মানুষ ৩১ লোকভুমির যে কোনো একটিতে গমন করে। এই ৩১ লোকভুমি হছে ৪ প্রকার অপায় : তীর্যক (পশু-পাখি কুল), প্রেতলোক (প্রেত-পেত্নী), অসুর (অনাচারী দেবকুল), নরক (নিরয়)। ৭ প্রকার স্বর্গ : মনুষ্যলোক, চতুর্মহারাজিক স্বর্গ, তাবতিংশ স্বর্গ, যাম স্বর্গ, তুষিত স্বর্গ, নির্মানরতি স্বর্গ, পরনির্মিত বসবতি স্বর্গ। রুপব্রম্মভূমি (১৬ প্রকার) = ১৬ প্রকার রুপব্রম্মভূমি । অরুপব্রম্মভূমি ( ৪ প্রকার) = ৪ প্রকার অরুপব্রম্মভূমি । মোট ৩১ প্রকার । এই ৩১ প্রকার লোকভুমির উপরে সর্বশেষ স্তর হচ্ছে নির্বাণ ( পরম মুক্তি ) [১৬] যেমন : ইহজন্মে মানুষ যদি মাতৃহত্যা , পিতৃহত্যা , গুরুজনের রক্তপাত ঘটায় তাহলে মৃত্যুর পর সেই মানুষ চতুর অপায়ে ( তীর্যক, প্রেতলোক, অসুর, নরক) জন্মগ্রহণ করে, আর ইহজন্মে মানুষ যদি ভালো কাজ করে তাহলে মৃত্যুর পর সেই মানুষ বাকি ২৭ লোকভূমিতে যেকোনো এক ভূমিতে জন্মগ্রহণ করতে হবে।

বৌদ্ধধর্মের মূলনীতি

চতুরার্য সত্য

  • দুঃখ
  • দুঃখ সমুদয়: দুঃখের কারণ
  • দুঃখ নিরোধ: দুঃখ নিরোধের সত্য
  • দুঃখ নিরোধ মার্গ: দুঃখ নিরোধের পথ

অষ্টাঙ্গিক মার্গ

এই আটটি উপায়কে একত্রে বলা হয় আয্য অষ্টাঙ্গিক মার্গ, যার দ্বারা জীবন থেকে দুঃখ দূর করা বা নির্বাণ প্রাপ্তি সম্ভব। এই আয্য অষ্টাঙ্গিক মার্গের উপর ভিত্তি করেই বৌদ্ধ ধর্মে দশ শীল, অষ্টশীল এবং পঞ্চশীলের উৎপত্তি। অষ্টাঙ্গিক মার্গকে বৌদ্ধ ধর্মের মূল ভিত্তি বলা যায়, যা মধ্যপথ নামে অধিক পরিচিত।

ত্রিশরণ মন্ত্র

আর্যসত্য এবং অষ্টবিধ উপায় অবলম্বনের পূর্বে ত্রিশরণ মন্ত্র গ্রহণ করতে হয়। এই মন্ত্রের তাৎপর্য:

  • বুদ্ধং শরণং গচ্ছামি - আমি বুদ্ধের শরণ নিলাম। বোধি লাভ জীবনের মুখ্য উদ্দেশ্য। বুদ্ধত্ব মানে পূর্ণ সত্য, পবিত্রতা, চরম আধাত্মিক জ্ঞান।
  • ধম্মং শরণং গচ্ছামি - আমি ধর্মের শরণ নিলাম। যে সাধনা অভ্যাস দ্বারা সত্য লাভ হয়, আধ্যাত্মিকতার পূর্ণ বিকাশ হয় তাই ধর্ম।
  • সঙ্ঘং শরণং গচ্ছামি - আমি সঙ্ঘের শরণ নিলাম। যেখানে পূর্ণ জ্ঞান লাভের জন্য ধর্মের সাধনা সম্যক্ ভাবে করা যায় তাই সঙ্ঘ।
  • আরও আছে বুদ্ধের ৯ গুণ,ধর্মের ৬ গুণ,সংঘের ৯ গুণ।
  • বুদ্ধের ৯ গুণ

ইনি সেই ভগবান অর্হৎ সম্যক সম্বুদ্ধ

শীল

শীল অর্থ নিয়ম বা নীতি।বৌদ্ধ ধর্ম অনুসারে ভিক্ষু,শ্রমণ,গৃহী বা সাধারণ মানুষদের জন্য শীল রয়েছে।এই শীল পালন করা একান্ত নিজের উপর নির্ভরশীল।

পঞ্চশীল বা পাঁচ নীতি:

বুদ্ধ প্রবর্তিত গৃহী বা সাধারণ মানুষের জন্য।

>প্রাণী বা যাদের পাঁচ ইন্দ্রীয় আছে তাদের হত্যা না করা

>অদত্ত বস্তু বা পড়ে থাকা কোন বস্তু না নেয়া

>কামাচার বা অবৈধ্য সম্পর্ক না করা

>মিথ্যা কথা না বলা

>সুরা জাতীয় অর্থাৎ মদ,গাঁজা প্রভৃতি সেবন না করা বা না খাওয়া

দুঃখ

বুদ্ধ দুঃখ কি, দুঃখের কারণ, দুঃখ দূর করার উপায় সম্বন্ধে উপদেশ দিয়েছেন। তার মতে জীবন দুঃখপূর্ণ। দুঃখের হাত থেকে কারও নিস্তার নেই। জন্ম, জরা, রোগ, মৃত্যু সবই দুঃখজনক। মানুষের কামনা-বাসনা সবই দুঃখের মূল। মাঝে মাঝে যে সুখ আসে তাও দুঃখ মিশ্রিত এবং অস্থায়ী। অবিমিশ্র সুখ বলে কিছু নেই। নিবার্ণ লাভে এই দুঃখের অবসান ঘটে। কামনা-বাসনার নিস্তারের মাঝে অজ্ঞানের অবসান ঘটে। এতেই পূর্ণ শান্তি অর্জিত হয়।তজগকব

ধর্মগ্রন্থ

"ত্রিপিটক" বৌদ্ধদের ধর্মীয় গ্রন্থের নাম যা পালি ভাষায় লিখিত। এটি মূলত বুদ্ধের দর্শন এবং উপদেশের সংকলন। পালি তি-পিটক হতে বাংলায় ত্রিপিটক শব্দের প্রচলন। তিন পিটকের সমন্বিত সমাহারকে ত্রিপিটক বোঝানো হয়েছে। এই তিনটি পিটক হলো বিনয় পিটক , সূত্র পিটক ও অভিধর্ম পিটক। পিটক শব্দটি পালি । এর অর্থ - ঝুড়ি, পাত্র , বক্স ইত্যাদি। অর্থাৎ যেখানে কোনো কিছু সংরক্ষন করা হয়।[১৭] বৌদ্ধদের মূল ধর্মীয় গ্রন্থ । খ্রীষ্ট পূর্ব ৩য় শতকে সম্রাট অশোক এর রাজত্বকালে ত্রিপিটক পূর্ণ গ্রন্থ হিসাবে গৃহীত হয়। এই গ্রন্থের গ্রন্থনের কাজ শুরু হয়েছিল গৌতম বুদ্ধ এর মহাপরিনির্বানের তিন মাস পর অর্থাৎ খ্রীষ্ট পূর্ব ৫৪৩ অব্ধে এবং সমাপ্তি ঘটে খ্রীষ্ট পূর্ব প্রায় ২৩৬ অব্ধে । প্রায় তিনশ বছরে তিনটি সঙ্ঘায়নের মধ্যে এর গ্রন্থায়নের কাজ শেষ হয়। [১৮]

তথ্যসূত্র

  1. Siderits, Mark (২০১৯)। "Buddha"The Stanford Encyclopedia of Philosophy। Metaphysics Research Lab, Stanford University। 
  2. "Buddhism". (2009). In Encyclopædia Britannica. Retrieved 26 November 2009, from Encyclopædia Britannica Online Library Edition.
  3. Lopez (2001), p. 239.
  4. Pew Research Center (2012a).
  5. "Christianity 2015: Religious Diversity and Personal Contact" (PDF)gordonconwell.edu। জানুয়ারি ২০১৫। ২৫ মে ২০১৭ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০৫-২৯ 
  6. লুয়া ত্রুটি মডিউল:উদ্ধৃতি/শনাক্তক এর 47 নং লাইনে: attempt to index field 'wikibase' (a nil value)।
  7. Gethin (1998), pp. 27–28, 73–74.
  8. Harvey (2013), p. 99.
  9. Powers (2007), pp. 392–393, 415.
  10. Williams (1989), pp. 275ff.
  11. Robinson & Johnson (1997), p. xx.
  12. White, David Gordon, সম্পাদক (২০০০)। Tantra in Practice। Princeton University Press। পৃষ্ঠা 21। আইএসবিএন 978-0-691-05779-8 
  13. Powers (2007), pp. 26–27.
  14. "Candles in the Dark: A New Spirit for a Plural World" by Barbara Sundberg Baudot, p. 305
  15. "tr. Robert Chalmers ed. E. B. Cowell [1895], "The Jataka"; Volume 1-6"। ২৯ সেপ্টেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুলাই ২০১২ 
  16. স্বধর্ম রত্ন চৈত্য , জিনবংশ মহাস্থবির - বুদ্ধ এডুকেশনাল ফাউন্ডেশন তাইওয়ান হতে প্রকাশিত । প্রকাশকাল : ২৫৩ বুদ্ধাব্দ/১৩৬৬ বঙ্গাব্দ , পৃষ্টা নং: ২১৪ , অধ্যায় : লোকপর্ব
  17. ত্রিপিটক পরিচিতি - ডঃ সুকোমল বরুয়া ও সুমন কান্তি বরুয়া , পৃষ্ঠা ১-৩, বাংলা অ্যাকাডেমি
  18. ত্রিপিটক পরিচিতি - ডঃ সুকোমল বরুয়া ও সুমন কান্তি বরুয়া , পৃষ্ঠা ১৪, বাংলা অ্যাকাডেমি