ভরত (সম্রাট)

ভারতপিডিয়া থেকে
ImportMaster (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ১৩:২৯, ৩ এপ্রিল ২০২০ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (robot: Import articles using বিশেষ:আমদানি)
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)
পরিভ্রমণে চলুন অনুসন্ধানে চলুন
ভরত (সর্বদমন), শকুন্তলা ও দুষ্মন্তের পুত্র. রাজা রবি বর্মা অঙ্কিত

ভরত জৈনহিন্দু পুরাণের এক কিংবদন্তি রাজার নাম। প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী, তিনি সমগ্র ভারত জয় করেছিলেন। এই জন্য তার বিজিত অঞ্চল ভারতবর্ষ নামে পরিচিত হয়। কোনো কোনো পুরাণের মতে, ভারতবর্ষ শব্দটির দ্বারা কেবল ভারতীয় ভূখণ্ডই নয়, সমগ্র বিশ্বকেই বোঝাত। জৈন ধর্মগ্রন্থগুলিতেও "ভরত চক্রবর্তী" নামে এক রাজার উল্লেখ পাওয়া যায়, যিনি সমগ্র বিশ্ব জয় করে সুমেরু বা মেরু পর্বতের উপর নিজের ধ্বজারোপণ করেছিলেন। পরে এই কাজের জন্য নিজের প্রতি বিতৃষ্ণ হয়ে নির্বাণ লাভের উদ্দেশ্যে জৈনধর্মে দীক্ষা নেন।

পৌরাণিক উপাখ্যান

মহাভারত (আদিপর্ব) অনুসারে, ভরত রাজা দুষ্মন্তশকুন্তলার পুত্র। তিনি ছিলেন একজন ক্ষত্রিয় চন্দ্রবংশীয় রাজা। তার প্রকৃত নাম ছিল সর্বদমন। পরে তার নামকরণ হয় ভরত

মহাভারত-এর উপাখ্যান অনুসারে, মহর্ষি বিশ্বামিত্র এক কঠোর তপস্যায় রত হলে দেবরাজ ইন্দ্র তার তপোভঙ্গের জন্য দিব্যাঙ্গনা মেনকাকে প্রেরণ করেন। মেনকা আপন রূপসৌন্দর্যে মোহিত করে বিশ্বামিত্রের তপোভঙ্গ করেন। বিশ্বামিত্রের ঔরসে তার গর্ভে একটি কন্যার জন্ম হয়। সদ্যোজাত এই কন্যাকে হিমালয়ের শীর্ষে মালিনী নদীর তীরে ফেলে স্বর্গে ফিরে যান মেনকা। ঋষি কন্ব কন্যাটিকে কুড়িয়ে পেয়ে আপন কুটিরে নিয়ে আসেন এবং নিজ কন্যারূপে পালন করে। তিনি এই কন্যার নাম রাখেন শকুন্তলা। কয়েক বছর পর, মহারাজ দুষ্মন্ত মৃগয়া করতে এসে কন্বের তপোবনে শকুন্তলার সাক্ষাৎ পান। শকুন্তলার রূপে মুগ্ধ হয়ে তিনি তাকে গান্ধর্ব মতে বিবাহ করেন ও তার সঙ্গে সহবাস করে তার গর্ভসঞ্চার করেন। পরে তিনি রাজধানীতে ফিরে আসেন এবং ঋষি দুর্বাশার অভিশাপে শকুন্তলার কথা বিস্মৃত হন।

এদিকে দুষ্মন্তের ঔরসে শকুন্তলার গর্ভে এক পুত্রের জন্ম হয়। ঋষি কন্ব এই পুত্রের নামকরণ করেন সর্বদমন। শকুন্তলা দুষ্মন্তের প্রাসাদে উপস্থিত হলে দুর্বাশার অভিশাপের প্রভাবে দুষ্মন্ত শকুন্তলাকে চিনতে পারেন না। পরে অবশ্য ঘটনাচক্রে শাপপ্রভাব উত্তীর্ণ হলে স্ত্রী-পুত্রের সঙ্গে দুষ্মন্তের মিলন ঘটে। সর্বদমনের নতুন নামকরণ হয় ভরত।

তিনি সমগ্র ভারতীয় ভূখণ্ড জয় করেন। এই কারণে তার রাজত্ব ভারতবর্ষ নামে পরিচিত হয়।

ভরতের স্ত্রীর নাম ছিল সুনন্দাদেবী। সুনন্দাদেবী ছিলেন সাধ্বী রমণী। তবু তার সকল সন্তানই জন্মের পরমুহুর্তেই মৃত্যুমুখে পতিত হয়। পুত্রাকাঙ্ক্ষায় তিনি গঙ্গাতীরে মরুইসোম যজ্ঞ করেন। ফলে ভরতের ভিমণ্যু নামে এক পুত্র জন্মে। তার বংশেই পরে পাণ্ডবদের জন্ম হয়।

ভরতের বাল্যজীবন কালিদাস বিরচিত অভিজ্ঞানশকুন্তলম্ গ্রন্থে বর্ণিত আছে। এই গ্রন্থ অবলম্বনে বাংলাতেও শকুন্তলা নামে একটি গ্রন্থ রচনা করেন অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর

বহিঃসংযোগ