উপেক্ষা জৈন

ভারতপিডিয়া থেকে
পরিভ্রমণে চলুন অনুসন্ধানে চলুন
উপেক্ষা জৈন
জন্ম (1986-03-24) ২৪ মার্চ ১৯৮৬ (বয়স ৩৮)
জাতীয়তাকানাডীয়
পেশাঅভিনেত্রী, মডেল, উপস্থাপক
কর্মজীবন২০০৭–বর্তমান
উচ্চতা১.৬৩ মিটার (৫ ফু ৪ ইঞ্চি)

উপেক্ষা জৈন হলেন একজন ভারতীয়-কানাডীয় অভিনেত্রী, মডেল, টেলিভিশন উপস্থাপক, লেখিকা, নৃত্যশিল্পী। তিনি প্রথম কানাডীয় হিসেবে প্রাইম টাইম ভারতীয় টেলিভিশনে স্থায়ী চরিত্রে অভিনয় করেছেন; স্টার প্লাসের প্রচারিত জনপ্রিয় টেলিভিশন ধারাবাহিক সাথ নিভানা সাথিয়া-এ অভিনয় করেছিলেন। তিনি ২০১৬ সালের শুরু থেকে ২০১৭ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত, উক্ত ধারাবাহিকে এনআরআই সন্তানের পুত্রবধু মনিকা মোদী চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন এবং তাঁর অভিনীত চরিত্রটি এই পরিবারের সর্বনাশ করার দিকে মনোযোগী ছিল। উপেক্ষা জৈন তাঁর ভাইরাল ভিডিও #র‍্যাপঅ্যাগেইনস্টরেপ (যেটি তিনি নিজেই লিখেছিলেন এবং এতে অভিনয়ও করেছিলেন)-এর জন্য আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত, যা ভারতের ধর্ষণের সংস্কৃতিকে লজ্জা দিয়ে বিশ্বব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি করেছিল। ২০০৮ সালে উপেক্ষা মিস ইন্ডিয়া ওয়ার্ল্ডওয়াইড কানাডার মুকুট অর্জন করেছিলেন এবং ২০১০ সালে প্রথম "প্রিন্সেস মিস ইন্ডিয়া ওয়ার্ল্ডওয়াইড"-এর খেতাব অর্জন করেছিলেন।

প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা

উপেক্ষা জৈন ১৯৮৬ সালের ২৪শে মার্চ তারিখে ভারতের কাশ্মীরের জম্মুর একটি জৈন পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি গ্রেটার টরন্টো এরিয়ায় তাঁর শৈশব অতিবাহিত করেছিলেন এবং সেখানেই তাঁর পড়াশোনা সম্পন্ন করেছেন। তিনি শৈশব থেকেই সবসময় চারুকলা অন্বেষণে উৎসাহিত ছিলেন। জৈন একজন প্রশিক্ষিত কত্থক এবং ভরতনাট্যম নৃত্যশিল্পী; তিনি টরোন্টো ভারতীয় শাস্ত্রীয় নৃত্য ইনস্টিটিউটের একটি কোম্পানীর একটি নৃত্যশিল্পী হিসাবে বিশ্ব জুড়ে তাঁর নৃত্য পরিবেশন করেছেন। তিনি প্রসিদ্ধ নৃত্যশিল্পী লতা পাদার কাছ থেকে নৃত্য শিখেছিলেন। জৈন তাঁর শৈশবের বেশ কিছু সময় মিসিসাগায়-এ কাটিয়েছিলেন; যেখানে তিনি গর্ডন গ্রেডন মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক ব্যবসা ও প্রযুক্তি প্রোগ্রামে ভর্তি হয়েছিলেন এবং পরবর্তীতে দ্য উডল্যান্ডস স্কুলে স্থানান্তরিত হন। তিনি তাঁর শ্রেণীতে প্রথম হয়ে উচ্চ বিদ্যালয় শেষ করে উইলফ্রিড লরিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ প্রোগ্রামে ভর্তি হন। অনার্স-সহ স্নাতক শেষ করার পরে, উপেক্ষাকে ক্যাডবারি অ্যাডামসে একজন সহযোগী ব্র্যান্ড ম্যানেজার হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল, সেখানে তিনি মাত্র এক বছর কাজ করে ছেড়ে দিয়েছিলেন। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল শিল্পের প্রতি তাঁর অনুরাগকে অনুসরণ করা। ক্যাডবারিতে কাজ করার সময়, উপেক্ষা তাঁর নৃত্য গোষ্ঠীর সাথে নৃত্য পরিবেশনা অব্যাহত রেখেছিলেন এবং টরোন্টোর খ্যাতনামা সিয়ার্স এবং সুইজার অ্যাক্টিং স্কুল-সহ বিভিন্ন অভিনয় কোর্সে ভর্তিও হন। ২০০৯ সালে তিনি মিস ইন্ডিয়া ওয়ার্ল্ডওয়াইড কানাডা এবং মিস ইন্ডিয়া ওয়ার্ল্ডওয়াইড-এর প্রথম প্রিন্সেস খেতাব অর্জন করেছিলেন। এছাড়াও তিনি "মিস বিউটিফুল স্মাইল" এবং "মিস ট্যালেন্টেড"-এর খেতাব লাভ করেছিলেন। এর পরেই মাইক মায়ার্স এবং জেসিকা আলবা অভিনীত দ্য লাভ গুরু-এর একটি চরিত্রে তিনি অভিনয় করেছিলেন। যার পরে, তিনি জিটিএ-এর বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে অভিনয় করেছিলেন। তবে মুম্বই থেকে কাজের প্রস্তাব আসার পর তিনি সে সকল কাজ রেখে তাঁর স্বপ্নের শহরে চলে আসেন।

কর্মজীবন

মুম্বইয়ের অচেনা জগতে খোঁজ করতে করতে, উপেক্ষা তাঁর প্রথম বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপনে বলিউড সুপারস্টার শাহরুখ খানের বিপরীতে কাজ করার সুযোগ পান। অতঃপর তিনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে একজন মডেল হিসেবে বলিউডের বিভিন্ন তারকাদের সাথে উপস্থিত হওয়ার প্রস্তাব পান; যার মধ্যে প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার সাথে হপ্পিটস, ক্যাটরিনা কাইফের সাথে ইয়ার্ডলি এবং লাইন অ্যাপ, হৃতিক রোশনের সাথে জাস্ট ড্যান্স, ইরফান খানের সাথে সিমপ্লি লার্ন আছে। এ ছাড়াও ঘরোয়া বিভিন্ন পন্য যেমন পার্লে, ডাভ, প্যানটিন, মারুতি, কার্বন মোবাইল, ব্ল্যাকবেরি, মুম্বই মিডডে, কোরিও ইত্যাদি পণ্যের জন্যও তিনি কাজ করেছেন।

২০১৫ সালে উপেক্ষা #র‍্যাপঅ্যাগেইনস্টরেপ নামে একটি ইউটিউব ভিডিও সহ-প্রযোজনা ও পরিবেশনা করেছিলেন; যা দ্য হাফিংটন পোস্ট, দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল, এনআরআই ট্রিবিউন,[১] কসমোপলিটন এবং অন্যান্য প্রকাশনা দ্বারা আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসা অর্জন করেছিল। ভারতে নারীরা যে অত্যাচার ও নির্যাতনের মুখোমুখি হচ্ছে এবং এই ধর্ষণ, লাঞ্ছনা ও ভন্ডামি সম্পর্কে সচেতনতা আনার ক্ষেত্রে এই ভিডিওটি ভারতের স্ত্রী বিদ্বেষ এবং পশ্চাদমুখী মানসিকতার নিন্দা করেছিল।[২]

তথ্যসূত্র

  1. "Rap against rape: Two Indian women share YouTube song with strong message"। ১৯ মার্চ ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ৩ ডিসেম্বর ২০১৭ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. "Brave, fearless, fiery and flawless: This poem on the 'modern day woman' celebrates today"। ৮ মার্চ ২০১৬। 

বহিঃসংযোগ