পদ্মিনী কোলহাপুরী

ভারতপিডিয়া থেকে
পরিভ্রমণে চলুন অনুসন্ধানে চলুন
পদ্মিনী কোলহাপুরী
PadminiKolhapure.jpg
২০১৪ সালের এপ্রিলে পদ্মিনী
জন্ম (1965-11-01) ১ নভেম্বর ১৯৬৫ (বয়স ৫৮)
পেশাঅভিনেত্রী, গায়িকা
দাম্পত্য সঙ্গীপ্রদীপ শর্মা (১৯৮৬)

পদ্মিনী কোলহাপুরী (জন্মঃ ১ নভেম্বর ১৯৬৫) একজন ভারতীয় অভিনেত্রী এবং গায়িকা, যিনি হিন্দি চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন। তার সফল কর্মজীবনে তিনি দুইটি ফিল্মফেয়ার এ্যাওয়ার্ড জিতেছিলেন, আশির দশকে তিনি মোটামুটি একজন জনপ্রিয় অভিনেত্রী ছিলেন।

কোলহাপুরী মাত্র ১৫ বছর বয়সে অভিনয় করে চলচ্চিত্র ইনসাফ কা তারাযু (১৯৮১ সালে মুক্তি পায়) এর মাধ্যমে 'ফিল্মফেয়ার এ্যাওয়ার্ড ফর বেস্ট সাপোর্টিং এ্যাকট্রেস' লাভ করেন এবং ১৯৮৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র প্রেম রোগ এ ১৭ বছরে অভিনয় করেন ঋষি কাপুর এর বিপরীতে এবং এই চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি 'ফিল্মফেয়ার এ্যাওয়ার্ড ফর বেস্ট এ্যাকট্রেস' জেতেন, এইভাবে তিনি সবচেয়ে কমবয়স্ক অভিনেত্রীর মধ্যে পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থান লাভ করেন।

পূর্ব জীবন

পদ্মিনী জন্মেছিলেন ১৯৬৫ সালের ১ নভেম্বর, তার পিতার নাম ছিলো পন্ধরীনাথ কোলহাপুরী যিনি একজন পেশাজীবী সঙ্গীতকার ছিলেন আর মাতার নাম ছিলো নিরুপমা কোলহাপুরী, পদ্মিনী ছিলেন তিন বোনের মধ্যে দ্বিতীয়। পদ্মিনীর বড় বোনের নাম হচ্ছে শিভাঙ্গি কোলহাপুরী যিনি অভিনেতা শক্তি কাপুরকে বিয়ে করেন, তাদের মেয়ে শ্রদ্ধা কাপুর হিন্দি চলচ্চিত্রে অভিনেত্রী হিসেবে কাজ করেন, এছাড়াও সিদ্ধান্ত কাপুর নামে তাদের আরেকটি পুত্র আছে যিনিও হিন্দি চলচ্চিত্র অভিনেতা। পদ্মিনীর ছোট বোন তেজস্বিনী কোলহাপুরীও হিন্দি চলচ্চিত্র অভিনেত্রী।[১]

কোলহাপুরী পরিবারের নামের শেষে কোলহাপুর যুক্ত হওয়ার কারণ পদ্মিনীর পূর্ব পুরুষ মহারাষ্ট্রের কোলহাপুর থাকত। পদ্মিনীর মা নিরুপমা কোঙ্কণী ভাষী কোঙ্কণী ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মেছিলেন যেটি ছিলো কর্ণাটক প্রদেশের ম্যাঙ্গালোরে[২] পদ্মিনীর পিতা পন্ধরীনাথ কোলহাপুরী একজন মেধাবী গায়ক এবং বীণা বাদক ছিলেন। তিনি ছিলেন পণ্ডিত কৃষ্ণরাও কোলহাপুরীর ছেলে (লতা মঙ্গেশকর, আশা ভোঁসলে'র পিতা পণ্ডিত দীনানাথ মঙ্গেশকর এর 'বলবন্ত নাটক একাডেমী'র সঙ্গী), যিনি গুজরাটের বরোদা দরবারে নাট্য সঙ্গীত গাইতেন। পন্ধরীনাথের মা ছিলেন পণ্ডিত দীনানাথ মঙ্গেশকরের সৎ-বোন এবং বলবন্তরাও অভিষেকীর বোন (গায়ক জিতেন্দ্র অভিষেকীর পিতা)। এইভাবে পদ্মিনী ছিলেন গায়িকা লতা মঙ্গেশকর এবং আশা ভোঁসলে'র ভাগ্নী।[৩] পদ্মিনী 'এয়ার ইন্ডিয়া' তে গ্রাউন্ড স্টাফ হিসেবে কাজ করেছেন।[২]

চলচ্চিত্র এ্যাসা পিয়ার কাহাতে কাজ করার সময় পদ্মিনী চলচ্চিত্রটির প্রযোজক প্রদীপ শর্মা ওরফে টুটু শর্মার সঙ্গে বন্ধুত্ব করেন। প্রেম করার পর তারা ১৯৮৬ সালে বিয়ে করেন। তাদের প্রিয়াঙ্ক শর্মা নামের একটা ছেলে হয়।[৪]

কর্মজীবন

বাচ্চা বয়সে পদ্মিনী তার বোনের সাথে ইয়াদোঁ কি বারাত (১৯৭৩), কিতাব এবং দুশমন দোস্ত চলচ্চিত্রে তার বোনের সঙ্গে ঐকতান সঙ্গীতে গেয়েছেন। পদ্মিনী পরে নিজের অভিনীত চলচ্চিত্রেও গান গান যেমন বিধাতা (১৯৮২) এর গান ছাথ ছ্যাহেলিয়া, ১৯৮৯ সালের চলচ্চিত্র হাম ইন্তেযার কারেঙ্গেতে এবং সড়ক ছাপ (১৯৮৭, কিশোর কুমার এর সঙ্গে)তে। তিনি সঙ্গীতকার বাপ্পী লাহিড়ী'র সঙ্গে করা 'মিউজিক লাভার্স' নামের একটা এ্যালবাম বের করেছিলেন। ১৯৮৬ সালে পদ্মিনী এই বাপ্পী এবং তার দলের সঙ্গে লন্ডনে একটি কনসার্টে গান গেয়েছিলেন।

গায়িকা আশা ভোঁসলে অভিনেতা দেব আনন্দকে তার প্রযোজনা করা এবং পরিচালিত চলচ্চিত্র 'ইশক ইশক ইশক' (১৯৭৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত) এ পদ্মিনীকে নিতে বলেছিলেন। এটার পর পদ্মিনী অন্যান্য চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য ডাক পান যেমন ড্রিমগার্ল (১৯৭৭), যিন্দেগী (১৯৭৬) এবং ছাজান বিনা ছুহাগান (১৯৭৮)। তিনি ১৯৮০ সালে মুক্তি পাওয়া গ্যাহরায়ী চলচ্চিত্রে একটি স্কুল পড়ুয়া মেয়ের চরিত্রে খুব সুন্দর অভিনয় করেন যে কালোজাদু দ্বারা আক্রান্ত।

পদ্মিনীর মা তাকে এয়ারলাইন্সের চাকরি ছেড়ে দিতে বলেন কারণ পদ্মিনী আরো অনেক চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য প্রস্তাব পাচ্ছিলেন। তার অভিনীত সবচেয়ে বিখ্যাত শিশুচরিত্র ছিলো রাজ কাপুর দ্বারা প্রযোজিত এবং পরিচালিত চলচ্চিত্র সত্যম শিবম সুন্দরম এ যেটি ১৯৭৮ সালে মুক্তি পায়। তার সফলতা আরো উপরে ওঠে ১৯৮০ সালে মুক্তি পাওয়া চলচ্চিত্র ইনসাফ কা তারাযু চলচ্চিত্রে অভিনয় করে, চলচ্চিত্রটিতে তিনি এক কিশোরীর চরিত্রে অভিনয় করেন যে ধর্ষিত হয়, এই চলচ্চিত্রটি ছিলো আসলে ১৯৭৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত যুক্তরাষ্ট্রের চলচ্চিত্র 'লিপস্টিক' এর পুনর্নির্মাণ। এই চলচ্চিত্রটির জন্য পদ্মিনী 'ফিল্মফেয়ার বেস্ট সাপোর্টিং এ্যাকট্রেস এ্যাওয়ার্ড' জেতেন। ১৫ বছর বয়সে তিনি ঋষি কাপুর এর বিপরীতে প্রধান নায়িকার চরিত্রে অভিনয় করেন যামানে কো দিখানা হে (১৯৮১) চলচ্চিত্রে। চলচ্চিত্রটি ফ্লপ হয়, কিন্তু পদ্মিনী আবার ঋষি কাপুরের সঙ্গে অভিনয়ের সুযোগ পান ঋষির পিতার পরিচালিত চলচ্চিত্র প্রেম রোগ (১৯৮২)তে। এই চলচ্চিত্রের জন্য পদ্মিনী 'ফিল্মফেয়ার বেস্ট এ্যাকট্রেস এ্যাওয়ার্ড' পান। ১৯৮১ সালের চলচ্চিত্র আহিস্তা আহিস্তার জন্য তিনি বিশেষ অভিনয় পুরস্কার জিতেছিলেন।

পদ্মিনী তার পেশাদারিত্ব আর পরিশ্রমের জন্য পরিচিত ছিলেন। সঞ্জয় দত্তের সঙ্গে দো দিলো কি দাস্তা (১৯৮৫) চলচ্চিত্র কাজ করার সময় তার জ্বর হয়েছিলো। তার অনেক চলচ্চিত্র বক্স অফিস সফলতা পায় যেমন বিধাতা (১৯৮২) এবং ছউতেন (১৯৮৩)। মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে অভিনয় করা ১৯৮৫ সালের পিয়ার ঝুকতা নেহি অনেক সফল হয়েছিলো, তিনি মিঠুনের সঙ্গে আরো চলচ্চিত্রে কাজ করেছিলেন। পদ্মিনী অনিল কাপুর এর সঙ্গে ভো ছাথ দিন (১৯৮৩) চলচ্চিত্রে কাজ করতে রাজী হয়ে যান যখন অনিল একদম নতুন অভিনেতা ছিলেন। চলচ্চিত্রটি অনেক ব্যবসাসফলতা সহ দর্শকপ্রিয়তা পায়, অনিল কাপুর চলচ্চিত্রটির সফলতার জন্য পদ্মিনীর প্রশংসা করেন।[৫]

তথ্যসূত্র

  1. Ashok Kumar (Expressindia.com) (১৩ আগস্ট ২০০৮)। "Working for TV serial was frustrating: Tejaswini"। Express India। ১৪ অক্টোবর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুলাই ২০১২ 
  2. ২.০ ২.১ If I had my way, I would have worked with Raj Kapoor all my life: Padmini Kolhapure Times of India 13 September 2013
  3. I feel bad about it: Pt. Pandharinath DNA 16 June 2009
  4. Starkid on the block: Priyank Sharma ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩০ জুন ২০১৩ তারিখে Hindustan Times 28 January 2013
  5. https://web.archive.org/web/20080410224643/http://groups.msn.com/PadminiKolhapureHeatoftheEighties/masalatruths.msnw। ১০ এপ্রিল ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জানুয়ারি ২০০৯  |শিরোনাম= অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য)

বহিঃসংযোগ