রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং

ভারতপিডিয়া থেকে
পরিভ্রমণে চলুন অনুসন্ধানে চলুন
রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং
Flagofraw.JPG
সংস্থার রূপরেখা
গঠিত২১ সেপ্টেম্বর ১৯৬৮
সদর দপ্তরনতুন দিল্লী, ভারত
নীতিবাক্যधर्मो रक्षति रक्षित: (ধর্ম ধার্মিককে রক্ষা করে)
সংস্থা নির্বাহীগণ
মূল সংস্থাকেন্দ্রীয় সচিবালয় (ভারত)
অধিভূক্ত সংস্থা
  • *অ্যাভিয়েশন রিসার্চ সেন্টার
    • রেডিও রিসার্চ সেন্টার
    • ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড টেকনিক্যাল সার্ভিসেস
    • ন্যাশনাল টেকনিক্যাল ফ্যাসিলিটিস অর্গনাইজেশন
    • স্পেশাল ফ্রন্টিয়ার ফোর্স

রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং (ইংরেজি: Research and Analysis Wing, শব্দ সংক্ষেপ: বা RAW বা R&AW) ভারতের বহিঃগোয়েন্দা সংস্থা। ১৯৬৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এই গোয়েন্দা সংস্থাটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠাকালিন পরিচালক ছিলেন রামেশ্বর নাথ কাও১৯৬২ সালে চীনের সাথে যুদ্ধ১৯৬৫ সালে পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধে পূর্বতন ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর ব্যর্থতার জন্য নতুন গোয়েন্দা প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়।[১] রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইংয়ের প্রাথমিক কাজ হচ্ছে ভারতীয় নীতিনির্ধারকদের তথ্য সরবরাহ করা। বিদেশী সরকার, প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিবর্গের তথ্য সরবরাহ করে রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং।[২][৩] কখনো কখনো বলা হয়, রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং হচ্ছে ভারতের জাতীয় শক্তির দক্ষ ব্যবহারের একটি মাধ্যম।[৪] ভারতের পরমাণু কর্মসূচির নিরাপত্তাজনিত ক্ষেত্রতেও নিযুক্ত ছিল[৫] ভারতীয় সংসদের কাছে রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং দায় বদ্ধ নয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের নিকট দায়বদ্ধ।[৬]

সদর দপ্তর

রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইংয়ের কেন্দ্রীয় সদর দপ্তর নতুন দিল্লীতে অবস্থিত।[৭]

ইতিহাস

ব্রিটিশ ভারতের প্রথম গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো প্রতিষ্ঠা করা হয় ১৯৩৩ সালে। ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হওয়ার পরে সঞ্জীব পিল্লাই আই.বি'র প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ভারতের বিভিন্ন যুদ্ধে এর ব্যর্থতার কারণে নতুন রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং প্রতিষ্ঠা করা হয়।

প্রশিক্ষণ

প্রাথমিক প্রশিক্ষণ

নিয়োগকৃত নতুন এজেণ্টদের মনোবল বৃদ্ধির জন্য প্রাথমিক ভাবে কিছু উৎসাহমূলক আলাপ-আলোচনার ব্যবস্থা করা হয়। এটি একটি দশ-দিন ব্যাপী কার্যক্রম যেখানে নতুন এজেণ্টরা গুপ্তচরবৃত্তি সংক্রান্ত বাস্তবতা, গোয়েন্দা জ্ঞান সংক্রান্ত বুদ্ধিমত্তা নিয়ে পরিচিতি লাভ করে। এছাড়াও সাধারণ রীতিনীতি, বাণিজ্যিক কৌশল, এবং তথ্যের শ্রেণীবিন্যাস সম্পর্কেও তাদের অবহিত করা হয়। পাশাপাশি স্পেস টেকনোলোজি, তথ্যগত নিরাপত্তা, জ্বালানি নিরাপত্তা এবং বৈজ্ঞানিক জ্ঞান সম্পর্কিত নানান ধারণাও তাদের শেখানো হয়। নব নিযুক্ত এজেণ্টদের বিভিন্ন বৈদেশিক ভাষা ও ভৌগোলিক কৌশলগত বিশ্লেষণ নিয়েও তাদের পারদর্শী করে গড়ে তোলা হয়। তাদের অধ্যয়নের তালিকায় সিআইএ, কেজিবি, মোসাদএমআই৬ নিয়েও কেইস স্টাডি রয়েছে। তাদের এও শিক্ষা দেওয়া হয় যে শত্রু-মিত্র নিরূপণ করা দেশের পররাষ্ট্র নীতির কাজ, গোয়েন্দা সংস্থার নয়। গুরগাঁওয়ের একটি আবাসিক প্রশিক্ষণ ও ভাষা ইনস্টিটিউটে অফিসারদের এই প্রাথমিক প্রশিক্ষণ পরিচালিত হয়।[৮][৯] মুম্বাইয়ে আর্থিক-গোয়েন্দাগিরি সংক্রান্ত একটি বহুমুখী-নিয়মানুবর্তীতামূলক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপিত করা হচ্ছে যেখানে নব-নিযুক্ত এজেণ্ট অফিসারদের মানি-লন্ডারিং-কে ঘিরে গড়ে উঠা বিভিন্ন অপরাধ সম্পর্কিত জ্ঞান নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।[১০]

আগাম প্রশিক্ষণ

প্রাথমিক প্রশিক্ষণের সমাপ্তির পর এজেণ্টরা ফিল্ড ইনট্যালিজেন্স ব্যুরো (সংক্ষেপেঃ এফআইবি)-এর অধীনে প্রশিক্ষিত হতে থাকে। এখানে একজন এজেণ্টের প্রশিক্ষণ সময়কাল ১-২ বছর অব্দি হয়ে থাকে। মূলত প্রতিকূল পরিস্থিতিতে কিভাবে অভিযান চালিয়ে যেতে হবে তা শেখানোর জন্য প্রতীকি প্রতিকূল অবস্থা সৃষ্টি করে এখানে এজেণ্টদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এছাড়াও রাতের আঁধারে কিভাবে অনুপ্রবেশ করতে হয় তা নিয়েও এজেণ্টদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। তাছাড়া কিভাবে ধরা পড়ে যাওয়া থেকে এড়ানো যায় এবং ধরা পড়ে গেলেও কিভাবে জিজ্ঞাসাবাদের সম্মুখীন হতে হয় তা নিয়েও বিস্তারিত মনস্তাত্ত্বিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়ে থাকে। পাশাপাশি নিরীক্ষণ দক্ষতা, মনোযোগ আকর্ষণ এবং গোয়েন্দা অভিযান অপারেট করার মত নানা নৈপুণ্যও এজেণ্টরা এই প্রশিক্ষণে পেয়ে থাকে। ফিল্ড প্রশিক্ষণ শেষে এজেণ্টদের চূড়ান্তভাবে নিরীক্ষণ করা হয়। অভিযানে নামার পূর্বে এজেণ্টদের আত্ম-রক্ষা সম্পর্কিত নানা দক্ষতা, বিশেষ করে ক্রেভ মাগা এবং গুপ্তচরবৃত্তি কাজে ব্যবহৃত নানান ধরনের প্রযুক্তিগত ডিভাইসের ব্যবহার শেখানো হয়। এজেণ্টদের এমনভাবে প্রশাসনিক নিয়মানুবর্তীতা শেখানো হয় যাতে করে কোনরূপ সন্দেহের উদ্রেক না করে যেন এজেণ্টরা তাদের গোপন অভিযান লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। এজেণ্টদের এই ফিল্ড প্রশিক্ষণ দেরাদুনে ভারতীয় সেনাবাহিনী একাডেমীতে প্রদান করা করা হয়।[৩][১১]

তথ্যসূত্র

  1. Raman, B. (7-3-2000)। "South Asia Analysis Group: Papers: The Kargil Review Committee Report"South Asia Analysis Group। ২০১০-০৬-১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ 2009-09-28  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  2. "B-Net:Reference Publications:India, Intelligence and Security:Encyclopedia of Espionage, Intelligence, and Security (2004)"। Findarticles.com। ২০০৯-০৬-০২। ২০১০-০৩-০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-১০-১১ 
  3. ৩.০ ৩.১ John Pike। "Global Security"। Global Security। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-১০-১১ 
  4. John Pike। "Research and Analysis Wing (RAW)- India Intelligence Agencies"। Globalsecurity.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৭-০২ 
  5. "RAW: India's External Intelligence Agency - Council on Foreign Relations"। Cfr.org। ২০১২-০৭-০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৭-০২ 
  6. "Research and Analysis Wing (RAW) - India Intelligence Agencies"। Fas.org। ২০১২-০৬-২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৭-০২ 
  7. Kumar, Vinay (২০১০-১২-২৬)। "Sanjeev Tripathi to head RAW"The Hindu। Chennai, India। 
  8. "Raw at War-Genesis of Secret Agencies in Ancient India" (http://www.defencejournal.com/feb-mar99/raw-at-war.htm ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২ মে ২০০৯ তারিখে)
  9. "To bridge language gap, R&AW ropes in native linguists as ‘gurus’ - See more at: http://indianexpress.com/article/india/india-others/to-bridge-language-gap-raw-ropes-in-native-linguists-as-gurus/#sthash.XK1VymYf.dpuf" (http://indianexpress.com/article/india/india-others/to-bridge-language-gap-raw-ropes-in-native-linguists-as-gurus/)
  10. "Soon, training school for secret agents in Mumbai" (http://timesofindia.indiatimes.com/india/Soon-training-school-for-secret-agents-in-Mumbai/articleshow/9253591.cms)
  11. "Open Secrets: India's Intelligence Unveiled"- Maloy Krishna Dhar. He was the joint director of IB.

আরও পড়ুন

বহিঃসংযোগ